নটী শব্দের অর্থ জেনে নিন

 


'নটী’ শব্দের অর্থটা আমাদের মাথায় রাখা দরকার। 'নটী'র সুডৌল অর্থ হলো—অভিনেত্রী, নর্তকী, নাটকে অভিনয় করে যে। যেমন নট নটী মানে অভিনেতা অভিনেত্রী। অভিনয়ে যার সীমাহীন দক্ষতা, তাকে বলা হয় নটরাজ। কুশলী অভিনেত্রীর বেলায় নটীরানী বলা হয় কিনা, জানা নেই। সমাজে প্রচলিত 'নটী'র আরও বহুবিধ দুরাচার অর্থ রয়েছে। যেমন—পতিতা, গণিকা, ছিনাল, বারাঙ্গনা, বিনোদিনী ইত্যাদি কদর্য সব বিশেষণ। বঙ্গদেশে চয়নিকা চৌধুরী ও পরীমনিদের দেখলেই মানুষ বোঝে, নটী'র এমন নিচ অরুচিকর শব্দ কিভাবে প্রচলিত হল!! 


আজ থেকে পঞ্চাশ একশো বছর আগেও বঙ্গদেশে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিলো যাত্রাপালা। সারাদেশে প্রায় সব মৌসুমে নানাধর্মী যাত্রাপালার আয়োজন হতো। এসব পালায় নাচগানের পাশাপাশি বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্থ হতো। বেহুলা লক্ষিন্দর, গাজি কালু চম্পাবতী, কাসেম মালা, কাজলরেখা এমন নামের নাটক বেশ জনপ্রিয় ছিলো। এ নাটকগুলোতে যেসব মেয়ে অভিনয় করতো, তাদেরকেই 'নটী’ বলা হতো। এই নটীদের মধ্যে যারা সুন্দরী এবং অভিনয়ে করিৎকর্মা, অভিনয়ের সুবাদে বাজারে তাদের বেশ নাম ডাক ছড়াতো। তার নাম শুনেই দশ গাঁয়ের লোকজন জমায়েত হতো যাত্রা প্যান্ডেলের নিচে। সমাজের উচ্চ শ্রেণির কামাতুর লোকজনের কাছে তার নটীপনা 'অন্যরকম’ চাহিদা তৈরি করতো। অরুচির আখড়া পরীমনির জন্মদিন পালনের উৎসব দেখে নটী শব্দের সঠিক তাৎপর্য খোলাসা হয়ে গেল। যার মধ্যে একবিন্দু লজ্জা অবশিষ্ট নেই, লুঙ্গি কাছা মেরে পরে সে তার উরু নিতম্ব হেলিয়ে দুলিয়ে কামোত্তেজক নাচ নেচেছে। এ যেন মিলিনিয়াম যুগের ক্যাবারে নর্তকী। ক্যাবারে উপস্থিত পুরুষদের শরীরের হিউমিডিটি ধাইধাই করে বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে কামনা মেটাতে পাগলা ঘোড়া বানিয়ে ছাড়ে। রাতের রানির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কোনো ভিআইপিকে দেখা যায়নি। যাদেরকে দেখা গেছে তারা সবাই অখ্যাত, দু'জন বাদে। এই দু'জন হলেন সুগার মম চনু মাসি ও দেবাশীষ বিশ্বাস। প্রয়াত চিত্রপরিচালক দিলীপ বিশ্বাসের পুত্র দেবাশীষকে দেখে মনে করুণা হল। তার বাপ দিলীপ বিশ্বাসের কয়েকটি সিনেমা দেখেছিলাম আমার ছোটবেলায়। দেবাশীষ এত ছ্যাবলা হলেন কবে জানতাম না। চনু মাসি তো শরীরবৃত্তীয় বর্গাচাষীদের শীর্ষতম একজন। সবাই জানেন চনু মাসি সুন্দরী অভিনেত্রী ও মডেলদের সেক্সকোর্সের ট্রেইনার। পরীমনি তার সুগার মমের (চনু মাসি) বিপুল উৎসাহ পেয়ে নগদ নারায়ণ এবং প্রতিপত্তির লোভে খুব সহজে ধনবান লোকদের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছে। 


পরীমনির কাছে লজ্জার আশা করে লাভ নেই। দেখতে হবে এই মেয়ে কোথা থেকে উঠে এসেছে। নেই তার শিক্ষা, নেই ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড। আস্ত গোবরের স্তুপ থেকে উঠে আসা পরীমনির আধা ন্যাংটো হয়ে নাচবেনা তো আর কে নাচবে? তবে তার কোমর ঘোরানো পা উঠানো দেখে মন চেয়েছে তার জায়গা বরাবর একটা লাথি মারি। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নষ্টা বেহায়া অসভ্য নির্লজ্জ অভিনেত্রী পরীমনি একজনই। বেটা দেখলেই তার খেলা খেলতে মন চায়। সাদা দাড়ি সাদা টুপিওয়ালা তার বুইড়া নানা নাতনির বেলেল্লাপনা বেশ উপভোগ করেন বলেই মনে হল। 


লুঙ্গি পরে যখন সে আড়াআড়ি গোছ মারছিল আমি ভেবেছিলাম কখন না জানি আবার লুঙ্গির ভেতর থেকে প্যান্টি খুলে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে মারে!! আমাদের মিডিয়ার অকালকুষ্মাণ্ড কিছু সাংবাদিকের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল তারা  পরীমনির পরিধেয় প্যান্টির কালার দেখার জন্য  উদগ্রীব হয়ে ছিলেন। রাতের রানির শারীরিক কলা দেখে কামোত্তেজনায় তারা হাত মারতে শুরু করে দিয়েছেন। এমন কিম্ভুতকিমাকার বেশভূষায় অতীতে আর কাউকে দেখা যায়নি। দেশে কত রকমের সমস্যা। সেসব এড়িয়ে ক্লীবলিঙ্গের সাংবাদিকরা অস্ট্রেলিয়ান এলসেশিয়ানের মত জিহবা ঝুলিয়ে টিভি ক্যামেরা নিয়ে দৌড়েছেন পরীমনির বার্থডে'র অনুষ্ঠানে। এদেরকে সাংবাদিক তো বলাই যায়না, বড়জোর গোবরে পোকা বলা যায়।


আমরা জন্মদিনের নামে সেলিব্রেটি শব্দের মুখোশ পরা একজন পুরোদস্তুর 'নটী'কে দেখলাম। যার কাজ হল যেকোনো উপায়ে নিজের শরীর উপজীব্য করে পুরুষের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা। আর দশটা বারাঙ্গনা নারী যেটা ঘিঞ্জি ঘরের আড়ালে করে, লোকলজ্জার ভয়ে আলাদা পল্লিতে করে, পরীমনি সেটাই নির্লজ্জভাবে লাখ লাখ মানুষের সামনে করছে। নিজের পতিত শরীর বিক্রি করে সমাজের কাছে অচ্ছুৎ হয়ে আছে রাতের রানি। পরীমনি হচ্ছে পৃথিবীর আদিমতম ব্যবসার পণ্য। আর চনু মাসি হল সেই ব্যবসার পণ্য বিক্রেতা।


✍লেখক মুহাম্মদ অলিউল্লাহ 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দেখুন সংবিধান সমাচার

পরিবেশের দোহাই দিয়ে আর কতদিন বন্ধ রাখবেন পাথর কোয়ারী জানতে চায় জনগণ

শান্তির খুঁজে কোথায় যাব?